ভিডিও

অর্থই যেন অনর্থের মূল

৬০ লাখ টাকার চেক-স্ট্যাম্প স্বাক্ষর করে তিনদিন পর মরদেহ দাফন

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৪, ১০:৪২ রাত
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৪, ০১:০২ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

পলাশবাড়ী (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি :  সরকারি চাকরিজীবী গণপূর্ত বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোতাহার মুন্সি (৭০) তার জীবদ্দশায় অর্জিত নগদ অর্থ ও সম্পদ বিক্রির টাকার ভাগ না দেওয়ায় মৃত্যুর পর মরদেহ দাফনে সহোদর ২ ভাই-৩ বোনসহ পরিবারের স্বজনরা বাধা প্রদান করেন।

দীর্ঘ তিনদিন মধ্যস্থতায় পুলিশ প্রশাসন ও এলাকার জনপ্রতিনিধির হস্তক্ষেপে পারিবারিক বৈঠক, দেন-দরবারের সমঝোতার শর্ত সাপেক্ষে স্বাক্ষরিত ৬০ লাখ টাকার চেক-স্টাম্প হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন শেষে মৃত্যুর তিনদিন পর মিললো মরদেহ দাফনের অনুমতি।

ধর্মীয় অনুশাসন উপেক্ষা করে এমন স্বার্থান্বেষী আলোচিত-সমালোচিত ও চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নের সাখোয়া গ্রামের পল্লীতে।

তথ্যানুসন্ধানে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাখোয়া গ্রামের মৃত সামছুল হক মুন্সির দ্বিতীয় ছেলে মৃত মোতাহার মুন্সি দাম্পত্যজীবনে ছিলেন নিঃসন্তান। মারজিয়া আক্তার নামে ছিল একমাত্র পালিত কন্যা। চাকরির সুবাদে মোতাহার মুন্সি ঢাকার কলাবাগান এলাকার নিজবাসায় নিয়মিত বসবাস করতেন।

বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন জটিলরোগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার একটি হাসপাতালে তিনি মারা যান। মৃত্যুর আগে তিনি তার মালিকানাধীন ৫৯ শতাংশ জমি ২ কোটি ১৮ লাখ টাকায় বিক্রি করেন। এছাড়া অন্যান্যসহ মৃত ব্যক্তির নামীয় বিশাল অর্থ-সম্পদ থাকায় ঘটে যত বিপত্তি।

এদিন বিধবা স্ত্রী মাসুমা বেগম, পালিত কন্যা মারজিয়া ও স্ত্রী'র বড়ভাই নূরুল ইসলাম কাজী দাফন সম্পন্ন করতে মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছান। কিন্তু মৃতের ছোটভাই নজরুল ইসলাম মুন্সি, বোন রাবেয়া বেগম ও লতিফা বেগমসহ পরিবারের অন্যান্যরা তার দাফনকাজে বাধা প্রদান করেন।

মরদেহ জিম্মি করে স্ত্রী মাসুমা বেগমের কাছে নিঃসন্তান মৃত ভাইয়ের পঞ্জিভূত সম্পদের বিপরীতে মোটা অংকের হিস্যা দাবি করে বসেন। এসময় মরদেহ রেখে তিনদিন ধরে দফায় দফায় সমঝোতা বৈঠক চলতে থাকে। কালক্ষেপণের এক পর্যায় স্ত্রী কর্তৃক ইসলামী ব্যাংকের বিপরীতে ৬০ লাখ টাকার চেক ও স্ট্যাম্প স্বাক্ষর ও হস্তান্তর সম্পন্ন শেষে দাফনের অনুমতি মেলে।

অবশেষে উপস্থিত থানা অফিসার ইনচার্জ আরজু মো. সাজ্জাদ হোসেন, ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তা, ইউপি সদস্য, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও গ্রামবাসীর মধ্যস্থতা সমঝোতায় গত বৃহস্পতিবার রাত দশটায় পারিবারিক কবরস্থানে মরদেহ দাফন সম্পন্ন করা হয়। দাফন শেষ করেই স্ত্রী-কন্যা ঢাকায় যাওয়ায় বিষয়টি সম্পর্কে তাদের কোনো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তা জানান, ঘটনাটি জানতে পেয়ে অবিরাম বৈঠকে সমঝোতা শেষে দাফনকাজ সম্পন্ন করেন তিনি। এঘটনাটি এলাকার সচেতনসহ সর্বস্তরের মানুষের মাঝে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি করেছে। মুখে-মুখে একটি কথাই ঘুরে-ফিরছে অর্থই যেন সকল অশান্তি-অনর্থের মূল।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS